পরশুরাম পৌরসভায় এবারও ফাঁকা মাঠেই জয়ের পথে আ'লীগ প্রার্থীরা
পরশুরাম পৌরসভায় এবারও ফাঁকা মাঠেই জয়ের পথে আ'লীগ প্রার্থীরা
পরশুরাম সংবাদদাতা:
পরশুরাম পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র-কাউন্সিলর পদে বিএনপি সহ অন্যদলের কেউ প্রার্থী না থাকায় সকল পদে আওয়ামীলীগ প্রার্থীরা ফাঁকা মাঠেই জয়ের পথে। বিগত পৌর নির্বাচনেও মেয়র-কাউন্সিলর ১৩ পদেই এ পৌরসভায় বিনাপ্রতিদ্বন্ধীতায় নির্বাচিত হন সরকার দলীয় প্রার্থীরা।
পরশুরাম উপজেলা ও পৌর বিএনপি নেতাদের অভিযোগ অব্যাহত হুমকির মুখে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও পৌর বিএনপির আহবায়ক কাজী ইউসুফ মাহফুজসহ দলীয় অনেক নেতাকর্মী বাড়ি-ঘর ছাড়া। পরিবারের সদস্যরাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এমন পরিস্থিতিতে রবিবার ( ১৭ জানুয়ারি) ফেনী জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে নির্বাচন বয়কটের ঘোষাণা দেন বিএনপি নেতারা।
সাংবাদিক সম্মেলনে তারা বলেন, নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারী পরশুরাম পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। গতকাল রবিবার মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। জেলা বিএনপির সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্র থেকে পরশুরাম পৌরসভায় পৌর আহবায়ক কাজী ইউসুফ মাহফুজকে শনিবার মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
এরপর থেকে সরকারী দলের সন্ত্রাসীরা বিএনপি মনোনীয়ত মেয়র প্রার্থীর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। নির্বাচনকে ঘিরে বিগত প্রায় দুই মাস যাবত সম্ভাব্য মেয়র ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি-ধমকি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা করেছে। ১৬ ডিসেম্বর পরশুরাম শহীদ বেদীতে শান্তিপূর্ণভাবে শ্রদ্ধানিবেদন করার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা নিষ্ঠুরভাবে হামলার অভিযোগও করেন তারা।
হামলায় উপজেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মো: আলমগীর হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মো: জহিরুল ইসলাম, বর্তমান যুগ্ম আহবায়ক আবদুল লতিফ সৈকত সহ বেশ কয়েকজন আহত হয়। এছাড়াও পরশুরাম উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক রোকন উদ্দিন লিটন, উপজেলা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মো: জাকির হোসেনের পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক নুরুল আলমের উপর হামলা ও তাদের মালিকীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাংচুর করেছে।
জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার অভিযোগ করেন, সরকারী দলের সন্ত্রাসীদের প্রতিনিয়ত মহড়ায় এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। তাদের হুমকির মুখে সাধারণ ওয়ার্ড ও সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হতে কেউ সাহস করেনি। প্রার্থী হতে আগ্রহীদের অনেকে বাড়ি-ঘর ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তিনি জানান, ৫ বছর আগে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনেও একই কায়দায় পরশুরাম পরশুরাম পৌরসভায় মেয়র ও কাউন্সিলর এ ১৩ পদেই অন্যদের প্রার্থী হতে না দিয়ে সরকার দলীয়রা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়। তিনি বিষয়টি পুলিশ সুপার খোন্দকার নূরুন্নবী কে অবহিত করেছেন বলেও সাংবাদিকদের জানান।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পরশুরাম উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুল হালিম মানিক, সদস্য সচিব ইব্রাহীম খলিল মনি, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মাহবুবুল হক মজুমদার ছাড়াও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, যুগ্ম আহবায়ক আলাউদ্দিন গঠন ও এয়াকুব নবী, জেলা ছাত্রদল সভাপতি সালাহ উদ্দিন মামুন প্রমুখ।
এব্যাপারে পরশুরাম উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতারা জানান, এ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও মেয়র প্রার্থী নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল বিএনপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে তারা এসব অপ্রচার করছে। মূলত জনসমর্থন না থাকায় নিশ্চিত ভরাডুবি জেনে বিএনপি প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিতে অনাগ্রহী।
এছাড়া বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কাজী ইউসুফ মাহফুজ ঋণখেলাপী হওয়ায় প্রার্থীতা বাতিল হবে জেনে মনোনয়নপত্র জমা দেননি। বাড়ি-ঘরে হামলা বা অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয় অসত্য দাবী করে মেয়র সাজেল চৌধুরী বলেন, পরশুরামে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বিরাজমান। কোন্দলে জর্জরিত বিএনপি দলীয় কর্মসূচী পালনে ব্যর্থ হয়ে এসব কাল্পনিক অভিযোগ করেন।