আগের মতো আর বিয়ের কাজ পাই না




২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ইং
sbit

দোকানের সামনেই ফুল দিয়ে সামিয়ানা তৈরির কাজ করছিলেন জসিম উদ্দিন। বেলির লহরগুলো কাঠের কাঠামোয় লম্বালম্বি বিছিয়ে দিয়েছেন। এখন স্কচটেপ দিয়ে কাঠামোর চারপাশে গ্লাডিউলাস, জারবেরা, গোলাপ, রজনীগন্ধা লাগিয়ে দিচ্ছেন। গায়েহলুদে কনেকে যখন মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হবে, সেসময় সামিয়ানাটা মাথার ওপর ধরা হবে।

আগে দোকানটার নাম ছিল ‘ফুলতলা ফ্লাওয়ার শপ’, মালিকানা ভাগ হয়ে এখন হয়েছে ‘মাহমুদা পুষ্পালয়’। বড় ভাইকে অংশীদার করে দোকানটা দিয়েছেন জসিম। বড় ভাই অংশী হলেও কারিগর তিনিই। ৩০ বছর ধরে গায়েহলুদ, বউভাত, ফুলসজ্জাসহ নানা অনুষ্ঠানকে পুষ্পশোভিত করেন জসিম।

আলাপের শুরুতেই তাঁর আক্ষেপ—‘আগের মতো আর বিয়ের কাজ পাই না।’ কেন পান না? জবাবে শোনালেন দীর্ঘ গল্প। মোদ্দা কথা হলো, ঢাকাসহ বড় শহররগুলোর বিয়ের অনুষ্ঠান এখন কমিউনিটি সেন্টার, ক্লাবের হাতে চলে গেছে। এসব জায়গায় কাজ পেতে তালিকাভুক্ত হতে হয়, দিতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সে কারণে কাজগুলো বেহাত হয়ে গেছে।

তবে এরমধ্যেও বসে নেই জসিম উদ্দিন। বিয়ের অনুষ্ঠানের পাশাপাশি সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে ফুল সরবরাহ করছেন। জসিম উদ্দিনের ভাষায়, ‘মানুষের জন্মের সময়ও আমাদের লাগে, বিয়ের সময়েও লাগে, মারা গেলেও লাগে!’

জসিম উদ্দিনের বাড়ি বরগুনা। ১৯৮৭ সালে ৯ বছর বয়সে ঢাকায় আসেন। কাঁটাবনের ফুলের দোকানে কাজ করতেন তাঁর মেজো ভাই। সেখানেই সহকারীর কাজ নেন জসিম উদ্দিন। ‘স্বপ্নের ঠিকানা’র মালিক ছিল তার ভগ্নিপতি। শুরুতে ফুল কাটা, ফুল বাছা এসবই করতেন। পরে ফুলসজ্জার কারিগরের কাজে সহায়তা করার সুযোগ পান। এভাবেই একদিন তোড়া বানানো শিখলেন। আরও পরে শিখলেন বিয়ের গাড়ি সাজানো, বিয়ের গেট–মঞ্চ সাজানো।